ভূতের গল্প – শ্রীজাত
অন্ধকারের ছমছমে হাত, চমকে গেছে গা। কে তার পিঠে হাত রেখেছে? ‘অমন করে না’ কে বলে রে? চেনা গলি? আবছা মুখে সে ছাদের ধারে হাত বাড়িয়ে ধরতে এসেছে। কাঁদছিলো বেশি আপন মনে, জোরসে অভিমান… এমন সময় ঠান্ডা হাতে ওড়না ধরে…
অন্ধকারের ছমছমে হাত, চমকে গেছে গা। কে তার পিঠে হাত রেখেছে? ‘অমন করে না’ কে বলে রে? চেনা গলি? আবছা মুখে সে ছাদের ধারে হাত বাড়িয়ে ধরতে এসেছে। কাঁদছিলো বেশি আপন মনে, জোরসে অভিমান… এমন সময় ঠান্ডা হাতে ওড়না ধরে…
অসূয়া, ঘন মেঘের সঙ্গিনী পেরিয়ে যায় বৃষ্টি-মহকুমা… আমার কাছে ছিল না কোনওদিনই অপারগতা মোছার মতো রুমাল। ক্ষুদ্র, আরও ক্ষুদ্র হতে গিয়ে দেখেছি লাল আকাশ মেঘে ছাই… পাশের গ্রামে অহমিকার বিয়ে। কী দিই তাকে? আমার লজ্জাই। এত যে আজ বজ্র ডাকাডাকি,…
কাঠবাংলো। চেনে কেবল অলীক পিওনই। এগোই, যেন স্লো মোশনে আন্তনিওনি। ঠিক যেখানে ‘কাট’ হবে, তার পরেই ঘন মেঘ তোমার কথায় জেগে ছিলাম, সে কোন জনমে… এখানে খুব মাংস ভাল। সস্তা পানীয়। বর্ষা এলে তুমি জলের অপেক্ষা নিও… আমার ভাগে উপত্যকা।…
বিকেল বেলার ভাঙা ঘুমে পর এক কাপ চা, ধোঁয়ায় ঢাকা ঘর, দুপুরে খুব বৃষ্টি হয়ে ঝিম দূরে যত বাড়ি টিম টিম কেমন একটা ভিজে মত মন মুখ থুবড়ে বন্ধ আছে ফোন। পাড়ার মোড়ে মাথার গিজগিজ গাড়ি টানায় পিছল ওভার ব্রিজ…
সমুদ্রে কেউ যাচ্ছে না আজ, সতর্ক রেডিও তুমি কেবল ঝড়ের মুখে চুল সরিয়ে দিও। জানলা খোলা, এ মরসুমে পর্দারা উদ্ধত- ঠান্ডা হাওয়ায় এক পেয়ালা গরম কফি’র মতো নৌকো ফেরায় বৃদ্ধ জেলে, ছোকরা দোকান গোটায় তুমি কেবল মেঘলা দিনে যেও না…
সোনা, তোমায় সাহস করে লিখছি। জানি বকবে প্রিপারেশন হয়নি কিচ্ছু। বসছি না পার্ট টুতে মাথার মধ্যে হাজারখানেক লাইন ঘুরছে, লাইন এক্ষুনি খুব ইচ্ছে করছে তোমার সঙ্গে শুতে চুল কেটে ফেলেছ? নাকি লম্বা বিনুনিটাই এপাশ ওপাশ সময় জানায় পেন্ডুলামের মতো দেখতে…
এমন কোনও পন্থা হয়, যেখানে তুমি ঠিক? দাঁড়িয়ে ছিলে ফিরবে ব’লে, হারিয়ে গেছে দিক। সকাল থেকে মুষলধার, বিষাদবর্বর ফেরার কথা ভুলিয়ে দিল, যাদের ছিল ঘর দিনের নাম বদলে দেয় পাহাড়সৈনিক – এমন কোনও পন্থা হয়, যেখানে তুমি ঠিক? কে যাবে…
এমন বৃষ্টিতে চিঠিরা পরপর সমাধি চায়। যেখানে কেউ নেই, গাছেরা মনে রাখে স্মৃতিবিদায়, সেখানে বৃষ্টিতে চিঠিরা পরপর সমাধি চায়। তোমাকে বলি শোনো, এ পথে গেছে যত চারণদল সকলে ভূমিহারা। অতীত বরাবর জনবিরল। জলের দম্পতি মেঘেরা স্থানু আজও, নির্দ্বিধায়। সবুজ ছাই…
নুনের ছায়া ভাসছে জলে। আপেলগাছে রোদ। বৃষ্টিশেষের গ্রামটি একা। এবার তো ফেরো… নিচুমুখের একটি ঘোড়া হেমন্তবাহী – রুটির পাত্রে বন্দি আকাশ। জাফর পানাহি। এমন ভাঙে জানলা, যেন বিষাদ বাদামি সন্ধে হলে অতীত নামে। বেরোই না আমি। সেতুর কাঠে পায়চারি চাঁদ।…
ওই কথা কি এভাবে কেউ বলতে পারে? হঠাৎ করে, সিড়ির বাঁকে, অন্ধকারে নিশ্বাস নাক গন্ধ পোহায়, চনমিয়া… ঘুপচি মতাে মুঠোর ভেতর একলা টিয়া ছটফটাচ্ছে দেখতে পাচ্ছি। চাই না উড়ান? ঠাকুর ঘরের চাল থেকে পাহাড়চূড়া? ঠোটের উপর ঘাম মুছে নাও। ডাকছে…